আবারো ব্যাংকিং খাতে বিপুল অর্থের সংকট - বাংলাদেশ দর্পণ
বার্তা ডেস্ক:
বর্তমানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের অনলাইন পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে , এতে করে গ্রাহক রা পড়েছে নানান জটিলতায় , সবুজ নামে এক গ্রাহক বলেন তিনি ২০০০ টাকা তুলে গিয়েছিলেন সেটাও তিনি উঠাতে পারেন নি , এভাবে যদি ব্যাংকিং খাত ধংসের পথে চলে যায় ধীরে ধীরে তাহলে সাধারণ গ্রাহক দের বিশ্বাসের জায়গার খুঁটি নর্বর হয় যাবে । তিনি আরো বলেন অন্য ব্যাংক এর তুলনায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এর অবস্থা খুব খারাপ ।
এক সূত্রে জানা যায় :
নানা অনিয়ম, খেলাপি ঋণ এবং সুশাসনের অভাবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সংকটে রয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি ‘ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে সরকার। এই পদক্ষেপকে ব্যাংক খাতে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে দুর্বল বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও দ্রুত হস্তক্ষেপের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ একদিকে যেমন ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে, তেমনি মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে দায়দায়িত্বের সীমা আরও স্পষ্ট করবে।
ব্যাংক খাতের বর্তমান অবস্থার কথা চিন্তা করে এরকম আইন প্রয়োজন ছিল। তবে এটা বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা লাগবে।
সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক; মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
দুর্বল ব্যাংকের জন্য বিভিন্ন নিষ্পত্তির বিধান রেখে গত ১৭ এপ্রিল ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইনে দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সীমাবদ্ধতা থাকায় নতুন এ আইন করার কথা বলেছে সরকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের আইন আছে। দুর্বল ব্যাংক নিষ্পত্তির জন্য যে ব্যয় হবে, তা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে আলাদা তহবিল গঠিত হবে। এ তহবিলে সরকারের পাশাপাশি আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, আইডিবির মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থায়ন বা ঋণ নিতে পারবে।
ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশের অধীনে দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সব ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগ ও অন্যান্য দায়িত্ব পালনের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। পুরো কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আলাদা এদকটি বিভাগ খুলতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুপারভিশন বিভাগগুলো নিয়মিতভাবে ব্যাংক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার হালনাগাদ তথ্য এ বিভাগে দেবে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা পেশ করবে ওই বিভাগ। খারাপ অবস্থায় পড়া ব্যাংকের জন্য প্রণীত আশু সংশোধনমূলক ব্যবস্থা (পিসিএ) ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় পরিকল্পনা হাতে নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের অবসায়ন সম্ভাব্যতা, আর্থিক ও পরিচালন প্রক্রিয়ার নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখাসহ বিভিন্ন বিষয় দেখতে হবে। এ ধরনের ব্যাংকের ব্যবসা বা আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিকল্পনা পরিবর্তন করবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বাংলাদেশ দর্পণ কে বলেন, ‘সবল ব্যাংকের কোনো ভয় নেই। এই আইনের অপব্যবহার যাতে না হয় সে ব্যপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটি সংকট কালীন সময়ের মধ্যে ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করা হয়েছে। আমরা চাইবো এই আইনরে মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ ও শুসৃঙ্খল ব্যাংক খাত উপহার দেওয়া। এই আইনটা মূলত কতিপয় দুর্বল ব্যাংকের জন্য তৈরি করা হেয়েছে। কিন্তু যেসব ব্যাংক ভালো আছে, যাদের মুনাফা ভালো, সম্পদের মান ভালো, যারা যথাযথভাবে প্রভিশণ সংরক্ষণ করছে সেসব ব্যাংকের উপর কোনো খড়গ নেমে আসবে না। এমনকি এসব ব্যাংক যাতে আরও ভালোভাবে চলতে পারে সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ধরনের সহায়তা করবে।’
No comments