খাগড়াছড়ির ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া কিশোরী কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদী সমাবেশ।
বান্দরবান প্রতিনিধি: সুকেল তঞ্চঙ্গ্যা.
আজ: ২৫ সেপ্টেম্বর রোজ: (বৃহস্পতিবার) বান্দরবান আদিবাসী শিক্ষার্থী বৃন্দ দের আয়োজনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিগীনালায় ৩ বাঙালির কর্তৃক ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি কিশোরী কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার)। তারই প্রেক্ষিতে আজ বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী সমাবেশ।
বান্দরবান সদর রাজার মাঠ হয়ে সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল থামে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে। পরে সেখানে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদী সমাবেশ এ বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য আদিবাসী ছাত্র পরিষদ বান্দরবান সদর থানার সম্মানিত সভাপতি: উভাথুই মারমা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্ট ওয়েল ফেয়ার ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক: বিতন তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ ম্রো ছাত্র ফোরামের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক: পায়া ম্রো, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল বান্দরবান সদর উপজেলার সম্মানিত সভাপতি: হুহাই মারমা, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী: লাবনী তঞ্চঙ্গ্যা, মানবাধিকার কর্মী: জন ত্রিপুরা, এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক: জমাধন তঞ্চঙ্গ্যা।
বক্তারা বলেন, ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তার মধ্যে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে ৩ বাঙালির কর্তৃক সংঘবদ্ধ ধর্ষণ টা একদমই কাম্য নয় এবং আমরা পার্বত্য বাসী এমন নেককারজনক ঘটনা কখনোই আশা করিনা। অপরাধীর কোনো জাত, ধর্ম, বর্ণ পরিচয় বহন করেনা। সুতরাং আমরা প্রশাসনের কাছে ধর্ষকদের অতিদ্রুত গ্রেফতার নিশ্চিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে ধর্ষকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ প্রশাসন সঠিক বিচার করতে ব্যর্থ। এ পর্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে অসংখ্য পাহাড়ি নারী ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু কোনো ঘটনার সঠিক বিচার পাওয়া যায় নি।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধন যে বা যারা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসরত সকল আদিবাসী রা সর্বদা প্রস্তুত সেসকল ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। এবং তার পরিণতি ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা হবে বলে জানান।
উল্লেখ্য: গত ২৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিগীনালায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি কিশোরী প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হন। পরে বাড়িতে ফিরতে দেরী হলে তাৎক্ষণিক পাহাড়ি কিশোরীর মা-বাবা তাদের মেয়ে কে খোঁজার জন্য বের হলে তারা দেখতে পান তাদের মেয়ে এক যায়গায় অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিশোরী মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠলে পুরো ঘটনার সবকিছু বর্ণণা করেন। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরীর মা-বাবা থানায় এ বিষয়ে অবগত করেন এবং মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, আমরা এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। এবং ইতিমধ্যে তদন্তের মাধ্যমে ১জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আরো ২জন পালাতক তবে খুব শীঘ্রই আমরা ঐ ২জন কে ও গ্রেফতার করে তাদের কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
No comments