Ads:

  • সর্বশেষ

    প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জের প্রবেশদ্বারে ‘গেট অব ড্যান্ডি’ নির্মাণের ঘোষনা দিলেন নাঃ ডিসি।

    নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোঃ ওয়াকিল আহমেদ। 


    প্রাচ্যের ড্যান্ডি-খ্যাত নারায়ণগঞ্জের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবার জেলার প্রবেশদ্বার সাইনবোর্ডে নির্মিত হচ্ছে ‘গেট অব ড্যান্ডি’। রোববার জেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসকের এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে।



    জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা পাটশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পের প্রসারের কারণে সারাবিশ্বে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’ নামে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন কারণে সেই ঐতিহ্য কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে। আমি জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমার একটি পরিকল্পনা ছিল এই জেলার গৌরবকে ফিরিয়ে আনার।


    তিনি আরও বলেন, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আধুনিক স্থাপত্যের গেট অব ড্যান্ডি নির্মাণের প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলাম। সভায় উপস্থিত সবাই সর্বসম্মতিক্রমে এটি অনুমোদন দিয়েছেন। দৃষ্টিনন্দন এই গেট অব ড্যান্ডি নির্মাণের খুঁটিনাটি সব কিছু বিবেচনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যেই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।


    জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জ শহর তার বুনন শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের জন্য প্রাচ্যের ড্যান্ডি নামে পরিচিত। এই উপাধি জেলার সমৃদ্ধি ও গৌরবকে ধারণ করে। জেলার রূপ ও আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই প্রতীকী প্রবেশদ্বার ‘গেট অব ড্যান্ডি’ নির্মাণ করা হবে, যা নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি এটি একটি আধুনিক জেলা হিসেবেও পরিচিতি লাভ করবে। 


    জানা গেছে, ‘গেট অব ড্যান্ডি’র নকশা খুবই দ্রুততার সাথে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগিরই এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষের নজর কাড়বে।


    জেলা প্রশাসক মনে করেন, এই গেটটি শুধু একটি স্থাপত্য কাঠামোই হবে না, এটি নারায়ণগঞ্জের জনগণের জন্য একটি গর্বের প্রতীক হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের জেলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং জেলার বাইরের মানুষদের কাছে নারায়ণগঞ্জের এক অনন্য পরিচিতি তৈরি করতে। ‘গেট অব ড্যান্ডি’ সেই লক্ষ্য পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।


     তিনি মনে করছেন, এই ধরনের একটি প্রতীকী প্রবেশদ্বার জেলার সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতেও সহায়তা করবে। 

    ‘গেট অব ড্যান্ডি’ নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি নিঃসন্দেহে নারায়ণগঞ্জের নতুন একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এটি শুধু যাতায়াতের রাস্তা নয়, বরং একটি দর্শনীয় পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, যেখানে দর্শনার্থীরা ফটোগ্রাফি এবং স্বল্প বিরতির জন্য আকৃষ্ট হবে।


    সভায় উপস্থিত নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গেট অব ড্যান্ডি নির্মাণের প্রস্তাব জেলা প্রশাসক মহোদয়েরই। প্রাচ্যের ড্যান্ডি হিসেবে খ্যাতি শুধু মুখে মুখেই আছে, দিন দিন এই খ্যাতি হারিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে নারায়ণগঞ্জকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলা হতো, সেই সব ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলে জেলার প্রবেশ মুখেই এই গেট অব ড্যান্ডি নির্মাণ করা হবে, যাতে কেউ ঢুকেই বুঝতে পারেন আমরা এখন প্রাচ্যের ড্যান্ডি নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করছি। 


    তিনি আরও বলেন, আমরা যারা এই জেলায় চাকরি করি, তারা আজ সবাই বলেছি আমরা এই জেলাকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতে চাই যেন এই জেলাকে সারাদেশে অন্যভাবে চেনে সবাই।


    নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি ও জন্মসূত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাতেম ‘গেট অব ড্যান্ডি’ নির্মাণের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। একসময় বস্ত্র শিল্পের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত ছিল নারায়ণগঞ্জ। নিটওয়্যার শিল্পের জন্মই হয়েছিল এখানে। দেশের নিটওয়্যার রপ্তানির একটি বড় অংশ এখনো এই জেলা থেকেই যায়। এতো কিছুর পরে এই জেলায় আলাদা কিছু থাকবে না আমার মনে হয় এটা ঠিক না। তাই প্রাচ্যের ড্যান্ডি নারায়ণগঞ্জে একটি ড্যান্ডি গেট জেলার প্রবেশদ্বার সাইনবোর্ড এলাকায় নির্মিত হলে যথাযথ হবে বলে আমি মনে করি। আমরা সব ব্যবসায়ী সম্প্রদায় জেলা প্রশাসকের এই শুভ উদ্যোগের পাশে থাকব বলে তাকে জানিয়েছি। 

    নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।

    No comments

    ADS :

    Post Bottom Ad

    ad728